ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

0.5mm ডার্মা রোলার চুল গজানোর জন্য সঠিক সাইজ। ব্যবহারের নিয়ম, সপ্তাহে কতদিন ডার্মা থেরাপি দরকার। Derma Roller ব্যবহারের সতর্কতা অবলম্বন করুন।

ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়। ডার্মা রোলার কি ও এর উপকারিতা। হেয়ার গ্রোথ থেরাপি চিকিৎসায় ডার্মা রোলার এর সঠিক ব্যবহার। স্কিনের সমস্যা দূর করতে ডার্মা রোলার কিভাবে কাজ করে? মাথার চুল গজাতে ডার্মা রোলার কিভাবে কাজ করে। ডার্মা রোলার থেরাপি দেয়ার নিয়মিত টিউটোরিয়াল। ডার্মা রোলার ডার্মালোজিস্টদের প্রথম পছন্দ।

ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়
ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

ডার্মা রোলার এমন একটি ডিভাইস যার মাধ্যমে খুব সহজেই দ্রুত হেয়ার গ্রোথ করা যায়। এডভান্স টেকনোলজির চিকিৎসা ব্যবস্থায় হেয়ার প্লান্টেশন এর চেয়ে ডার্মা রোলার থেরাপি অতি কার্যকর। তাছাড়া ত্বকের বিভিন্ন সমস্যায় ডার্মা রোলার এর কার্যকারিতা বেশ গ্রহন যোগ্য। আপনি কি জানেন ০.৫মিলিমিটারের ডার্মা রোলার মাথার জন্য কত উপকারী একটি থেরাপি।

শুধুমাত্র ডার্মারোলার ব্যবহারেই মাথায় চুল গজানো সম্ভব। ডার্মারোলার সাইজ টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। ডিজিটাল চিকিৎসা হিসাবেও ডার্মারোলার থেরাপি জনপ্রিয় এবং কার্যকরী। ডার্মারোলার ব্যবহার করার নিয়ম। ডার্মারোলার সাইজ কত হলে চুলের গ্রোথের জন্য ভালো। বড় ডার্মারোলার সাইজ কি চুলে ব্যবহার করা যাবে। ডার্মারোলার কতদিন পর পর ব্যবহার করা ভালো। ডার্মারোলার চুলের স্কালপে কিভাবে রোলিং করতে হবে।

ডার্মারোলার এর উপকারিতা ও কোথায় পাবেন জানুন। চুল পড়া রোধে ডার্মারোলার গুরুত্বপূর্ণ একটি চিকিৎসা থেরাপি। ডার্মারোলার ব্যবহার করলে সত্যিই নতুন চুল গজায়। বাসায় ডার্মারোলার ব্যবহার করার আদর্শ নিয়ম। একটি মাইক্রো নিডেলের ডার্মারোলার কতবার ব্যবহার করা যায়। রেগুলার ডার্মারোলার ব্যবহারে নতুন চুল গজায়।

হেয়ার গ্রোথ ডার্মা রোলার কি?

ডার্মা রোলার হচ্ছে অনেক গুলো নিডেল বা সুই এর তৈরি একটি রোলার, যা যে কোনো স্কিনের জন্য উপকারী। মুখের স্কিন বা মাথার ত্বকের কোষ নতুন করে তৈরি করার নিডেল রোলার। টাক মাথায় চুল গজাতে  খুবই কার্যকরী একটি থেরাপি রোলার। ডার্মা রোলার ব্যবহারে ত্বকের রক্ত সঞ্চালন খুব দ্রুত বেড়ে যায়, ফলে ত্বকে নতুন কোষ তৈরি হয়। ০.২৫ মিলিমিটার থেকে ২ মিলিমিটার প্রর্যন্ত হয়ে থাকে যা স্কিন অনুযায়ী ব্যবহার করতে হয়। 

প্রতিটি ডার্মা রোলারে ২০০ থেকে ৬০০ নিডেল থাকে যা ত্বকে ছোটো ছোটো গর্ত করে রক্ত সঞ্চালন বাড়িযে দেয়। রবারের ভিতরে নিডেলগুলো আটকানো থাকে এবং খুবি সুক্ষ নিডেল দ্বারা তৈরি। মুখের স্কিনের সকল সমস্যা দূর করতে এবং মাথবা দাড়ি দ্রুত গজাতে এই ডার্মা রোলার ব্যবহার করা হয়। নিডেল গুলো এতি সুক্ষ যে ত্বকে রোলিং করলে কোনো যন্ত্রণা বা ব্যাথা অনুভব হয় না। ডার্মা রোলার এর নিডেল গুলো টাইটেনিয়ামের তৈরি হয় যা ত্বকের নিচে খুব দ্রুত রক্ত সঞ্চালন বাড়িযে ত্বকের ভিতরে নতুন নতুন কোষ তৈরি করে।

মিনোক্সিডিল ৫% দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর টিপস

ডার্মারোলার হচ্ছে সুচালো নিডেলযুক্ত একটি মেশিন। যেখানে অসংখ্য সূচালো নিডেল ধারা যুক্ত থাকে। ডার্মারোলার দিয়ে স্কিনে রোলিং করার মাধ্যমে স্কিনের বিভিন্ন অংশ ছোট ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়। মাথার স্কিনে গর্ত সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের চুল গজানোর অ্যান্টিজেন এবং কোষ তৈরি হয়। ফলে ওই সকল স্থান থেকে খুব দ্রুত চুল গজায়।

চুল গজানোর জন্য কেনো ব্যবহার করা উচিত 

টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য এ ধরনের ডার্মারোলার থেরাপি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে ডার্মারোলার থেরাপি খুবই জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি। একটি ডার্মারোলার এ অসংখ্য ছোট ছোট সূচালো নিডেলের মাধ্যমে তৈরি হয়। 
প্রতিটি ডার্মারোলার প্রায় ৪০০ থেকে ১০০০ টি পর্যন্ত ছোট ছোট নিডেল দ্বারা তৈরি থাকে। নিডেলগুলো টাইটেনিয়াম এর এবং খুবই সূচালো ধারালো থাকে। মাথার স্কিনে গাঁথলেও খুব সহজে টের পাওয়া যায় না কিংবা ব্যাথা লাগে না।

ডার্মারোলার খুবই সুক্ষ্ম টাইটেনিয়াম দ্বার তৈরি হয়ে থাকে। টাইটেনিয়াম এর তৈরি সূচালো নিডেল যখন স্কিনে লাগানো হয় তখন স্ক্রিনের কোন সমস্যা হয় না। তাছাড়া ডার্মারোলার স্কিনে বেশি খারাপ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। স্কিনের বিভিন্ন অংশের ছিদ্র হওয়ার ফলে বিভিন্ন অংশে নতুন নতুন কোষ বা সেল তৈরি হয়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য ডার্মারোলার কার্যকরী একটি থেরাপি। ডার্মালোজিস্ট-রা চুলের চিকিৎসায় এইধরনের থেরাপির পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ডার্মা রোলার কিভাবে কাজ করে

ডার্মা রোলার এমন একটি অতি সুক্ষ যন্ত্র যা ত্বকের কোষ তৈরিতে সহায়তা করে। একটি ডার্মা রোলার যখন ত্বকের উপরে রোলিং করা হয় তখন ত্বকে খুবই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্র তৈরি হয়। যেমন, আমাদের কোথাও কেটে গেলে ক্ষত হয়ে ব্লাড বের হয় এবং সেখানে খুব দ্রুত প্রতিরোধ তৈরি করে। তেমনি ডার্মা রোলার ব্যবহারে অসংখ্য ছিদ্র হয় এবং সেখানে ব্লাড সঞ্চলন হয়।

ছোট ছোট অসংখ্য মাইনর ইনজুরির ফলে সেই স্থানে ব্লাড ফ্লো বেড়ে যায় যা স্কালপের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের মাথার উপরের ত্বকে রক্ত সঞ্চালন একটু কম হয় কারনে উপরে থাকার ফলে ব্লাড ফ্লো কাজ করে না। ডার্মা রোলার এমন একটি ডিভাইস যা ত্বকে বা স্কালপে রাবিং করার ফলে রক্ত চলাচলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। 

মাথার ত্বকে যখন ব্লাড ফ্লো বেড়ে যাবে তখন চুলের গোড়া পুষ্টি পাবে যার ফলে নতুন চুল গজাতে সহায়তা করবে। এছাড়াও দূর্বল চুলগুলো শক্ত মজবুত হতে সহায়তা করবে। অনেকেই এটি মুখের ত্বকে রাবিং করে থাকে, ফলে মুখের ত্বকে কোনো সমস্যা থাকলে স্থায়ী সমাধান হয়ে যায়। অর্থাৎ, ডার্মা রোলার ত্বকের নিউট্রেশন বাড়ায় এবং নতুন নতুন কোষ বা সেল তৈরি করে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অন্যতম চিকিৎসা হচ্ছে ডার্মা রোলার ডিভাইস দ্বারা ত্বকের নিচে পুষ্টি যোগানো।

চুলের জন্য ডার্মারোলার কতটা কার্যকরী

ডার্মারোলার টাক মাথায় দ্রুত চুল গজানোর জন্য আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। সকল ডার্মালজিস্টরা এ ধরনের ডার্মারোলার সাজেস্ট করে থাকে। ডার্মারোলার বিভিন্ন সাইজের তৈরি হয়ে থাকে। স্কিনের জন্য কিছু সাইজের ডার্মারোলার তৈরী হয়।
ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়
ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

মাথার চুলের থেরাপির জন্য বিভিন্ন ধরনের ডার্মারোলার সাইজ রয়েছে। টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য 0.5mm সাইজ থেকে 2mm পর্যন্ত ডার্মারোলার সাজেস্ট করে থাকে। স্কিনের জন্য যেটা ব্যবহার করা হয় সেটি সম্পূর্ণ আলাদা থাকে। স্কিনের জন্য যে সকল ডার্মারোলার ব্যবহার করা হয় এগুলো খুবই সূক্ষ্ম থাকে। তবে চুলের ক্ষেত্রে আগে আদর্শ ডার্মারোলার সাইজ নির্ধারণ করা জরুরী। 

এক একটি মাথার জন্য এক এক ধরনের ডার্মারোলার সাইজ ব্যবহার করা উচিত। ডার্মারোলার ব্যবহারে মাথার চুল খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। চুলের বিভিন্ন অংশের নতুন নতুন করে অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। দ্রুত চুল গজানোর যে সকল সেল বা কোষ থাকে এগুলো উৎপন্ন হয়। আমাদের মাথার ত্বকের  কিছুটা নিচে ত্বকের স্কালপ থাকে। এই স্থানে চুলের বিভিন্ন ধরনের খাদ্য উৎপাদন হয়। চুলের জন্য দরকারী বিভিন্ন ধরনের অক্সিজেন

উৎপাদন হয়। সঠিক অক্সিজেন পেলে ওই সকল স্থানে চুল গজানো শুরু হয়। মাথার স্কালপে রক্ত সঞ্চালন কম থাকলে চুলের সেল বা কোষ তৈরি উৎপন্ন হয় না। এই অবস্থায় ডার্মারোলার এর মাধ্যমে রোলিং করে থেরাপি নেওয়া হয়। তখন ঐ সকল স্থানে খুব দ্রুত অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। ফলে, চুল উৎপাদন বা চুল বের হওয়ার বিভিন্ন ধরনের সেল তৈরি হয়।

নতুন ত্বক গঠনে ডার্মা রোলার এর কার্যকরীতা

নতুন ত্বক গঠনের ডার্মাল রোলার এর কার্যকারিতা অনেক বেশি। বিশেষ করে যখন এটি ধরা আপনি রোলিং করা হয় তখন চুলের গোড়া এবং ত্বকের নিচে অনেক পুষ্টি জন্মায়। ফলে এ সকল স্থানে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেলের  আনাগোনা অনেক বেড়ে যায়। ত্বকের নিচের স্থানে বিভিন্ন সমস্যাগুলো দূর হয়ে যায়। আমাদের ত্বকে অনেক দুর্বল এবং মৃত চামড়া রয়েছে সেগুলো উঠে গিয়ে নতুন নতুন চামড়া তৈরি হয়।

বাজারে অনেক ধরনের বাজারে অনেক ধরনের ডার্মা রোলার পাওয়া যায়। মাথার চুলের জন্য এবং ত্বকের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাইজের বিভিন্ন ডার্মা রোলার পাওয়া যায়। ০.২৫ মিলিমিটার থেকে ০.৫ মিলিমিটার গুলো বাসায় ব্যবহার করার জন্য উপযোগী। এর চাইতে যেগুলো বড় ডার্মা রোলার রয়েছে এগুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেনা।

সেরা ফল পেতে ডার্মা রোলার এর সঠিক ব্যবহার

ডার্মা রোলার যেহেতু একটি টাইটেনিয়াম নিডেলযুক্ত একটি ডিভাইস তাই এর সঠিক ব্যবহার না যেনে ব্যবহার করা উচেত না। ডার্মা রোলার বাসায় ব্যবহার করার জন্য আগে রাবিং প্রসেস শিখতে হবে। ভালো ফলাফল পেতে অবশ্যই অভিজ্ঞ ডার্মালোজিস্ট এর সথে পরামর্শ করে নেয়া উচিত। বাসায় হোম থেরাপির জন্য 0.25mm এবং 0.5mm সবচেয়ে সেরা। এর চাইতে বড় মিলিমিটারের ডার্মা রোলার ব্যবহার করতে অবশ্য ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

বড় ডার্মা রোলার তাড়াই ব্যবহার করতে পারে যারা প্রফেশনাল। ডার্মা রোলার দিয়ে সপ্তাহে ২ বাড়ের বেশি রাবিং করা উচিত না। আপনার কোনো স্থানে ক্ষত হলে সেটা শুখাতে যেমন কিছুটা সময় লাগে তেমনি ডার্মা রোলার এর মাধ্যমে অসংখ্য মাইনর ট্রমা বা ইনজুরি হয় যা শুখাতে কিছুটা সময় দিতে হয়। তাছাড়া একটি ডার্মা রোলার 1.5 মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত না। যেহেতু এটি টাইটেনিয়াম নিডেলের তৈরি তাই কয়েকবার ব্যবহার করা ডার্মা রোলার ইনফেকশন এর কারন হতে পারে। 

ডার্মা রোলার ব্যবহারের ১২ ঘন্টা আগ থেকে কোনো হেয়ার গ্রোথ আইটেম, তেল বা মুখের জন্য কোনো আইটেম ব্যবহার করা উচিত না। যেই স্থানে ডার্মা রোলিং করা হবে সেখানে প্রথমে ভালো করে পরিস্কার করতে হবে। ময়লাযুক্ত স্থানে রাবিং করলে ইনফেকশন হওয়ার চান্স বেশি থাকে। মেডিকেল জীবানু নাশক যেমন হেক্সিসল, এলকোহল, হ্যান্ড সেনিটাইজার ইত্যাদি এগুলোর মাধ্যমে স্থান বা ত্বক পরিষ্কার করতে পারেন। 

মাথায় ডার্মা রোলার ব্যবহারের আগেও এইসবের পাশাপাশি শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করতে পারেন। ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডার্মা রোলার জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। কিভাবে ডার্মা রোলার রাবিং করবেন তা যানতে অবশ্যই অভিজ্ঞ কারো সাথে পরামর্শ করুন অথাবা কোনো টিউটোরিয়াল দেখুন। ব্যবহার শেষে ত্বক এবং ডার্মা রোলার দুটোই জীবানু নাশক দ্বারা পরিষ্কার করুন।

ডার্মারোলার কতদিন পর পর ব্যবহার করা উচিত

ডার্মারোলার থেরাপি একজন ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে। সে কয়দিন পরপর ডার্মারোলার ব্যবহার করবে তার মাথার চুলের জন্য। মাথার চুল পড়া সমস্যার উপর নির্ধারণ করা হয়, সে তার কতদিন পরপর ডার্মলার ব্যবহার করবে। ডার্মারোলার ব্যবহার করার জন্য বেশ কিছু নিয়ম ও নীতি রয়েছে।

টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য তিন দিন পর পর ডার্মারোলার দিয়ে থেরাপি নেয়া উচিত। যখন নরমাল দিয়ে থেরাপি দেওয়া হয় তখন স্কিনে অনেক ছোট ছোট ইনজুরি হয়। এগুলো ঠিক হতে কমপক্ষে দুই দিন থেকে তিনদিন সময় লেগে যায়। ওই সকল ইনজুরি বা ট্রামা যখন ঠিক হয়ে যায় তখন আবার ডার্মারোলার থেরাপি নেয়া উচিত। 

একটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে একটি ডার্মারোলার দীর্ঘ দিন ব্যবহার করা উচিত নয়। অনেকদিন ঘন ঘন একটি ডার্মারোলার ব্যবহার করা উচিত না। ৩/৪ দিন পর পর ডার্মারোলার দিয়ে থেরাপি দিলে খুব দ্রুত চুল বৃদ্ধি হয়। কার্যকর ফলাফল পেতে মিনোঅক্সিডিল ব্যবহার করতে হবে। ডার্মারোলার ও মিনোঅক্সিডিল ব্যবহারে বেশি কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়। টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য ডার্মারোলার এর পাশাপাশি অন্য উপাদান মাথায় দেওয়া উচিত।

ডার্মা রোলার এর ৯টি উপকারিতা

  1. ডার্মা রোলার ব্যবহারে ত্বকের নিচে নিউট্রেশন তৈরি করে, যা হেয়ার গ্রোথ এবং স্কিনের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে।
  2. ডার্মা রোলার এর নিডেল দ্বারা ছিদ্র হওয়ার ফলে অসংখ্য কোষ বা সেল তৈরি করে।
  3. মাথার যেসকল স্থানের কোষগুলো নিস্ক্রিয় হয়ে যায় সেইসব স্থানের কোষ সতেজ করে এবং ব্লাড ফ্লো বাড়ায়।
  4. ডার্মা রোলার দাড়ি গজাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের যাবতীয় সমস্যা দূর করে।
  5. ডার্মা রোলার ব্যবহারের পরে মিনঅক্সিডিল ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো ফলাফল নিয়ে আসে।
  6. প্রতিটি মাইনর ইনজুরির স্থানে কিছু কোষ উৎপন্ন করে, পুরাতন কোষগুলো ধ্বংস করে ফেলে।
  7. যেসকল স্কিন বা ত্বক দূর্বল সেইসকল স্কিন রিপেয়ার করে। উঁচুনিচু ত্বক সোজা করে ত্বকের সেল বাড়ায়।
  8. ডার্মারোলার থেরাপি মাথার বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। মাথার ত্বকের ফলিকলের নিচে অনেক চুল থাকে, যেগুলো ত্বকের জন্য গজাতে পারে না। ডার্মারোলার দিয়ে রোলিং করার ফলে ত্বকে ছিদ্র হয়ে চুলগুলো খুব দ্রুত বেড় হয়।
  9. টাক মাথার স্কিন যখন মসৃণ হয়ে যয়, তখন চুলের নতুন সেল বেড় হতে পারে না। ডার্মারোলার এর মাধ্যমে সেলগুলো উজ্জীবিত হয় এবং নতন সেল বাড়তে থাক।

ডার্মারোলার সাইজ বাছাই টিপস

টাক মাথায় চুল গজানোর জন্য একটি আদর্শ ডার্মারোলার সাইজ কিভাবে বাছাই করবেন? চলুন জেনে নেই আপনার মাথার জন্য কি ধরনের ডার্মারোলার ব্যবহার করবেন। ধরুন আপনার মাথায় চুল খুবই কম। আপনার মাথায় অনেক অংশের টাক পড়ে গিয়েছে। তাহলে আপনার বেশি বড় নিডেলযুক্ত ডার্মারোলার এর কোন প্রয়োজন নেই।

0.5mm এর ডার্মারোলার ব্যবহার করাটাই আপনার জন্য ভালো। অনেকের মাথার চুল অনেক মোটা থাকে। চুলের গোড়াগুলো অনেক শক্ত থাকে। যে সকল ডার্মারোলার ব্যবহারকারীদের জন্য একটু বড় ডার্মারোলার ব্যবহার করা উচিত। 

মাথার চুল শক্ত হওয়ার কারণে ডার্মারোলার সঠিক স্কিন পর্যন্ত পৌঁছাতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। কিছুটা বড় নিডেলযুক্ত অর্থাৎ 1mm ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকের মাথায় সব চুল মিলিয়ে যদি পাঁচ শতাংশর ভেতরে ধরেন দুই থেকে তিন শতাংশ চুল পড়ে গিয়েছে। ওই সকল মাথায় বা স্কিনে 0.75mm ডার্মারোলার ব্যবহার করা উচিত। যাদের চুল নরম ওই ধরনের ব্যক্তির জন্য 0.75mm হচ্ছে আদর্শ সাইজ।

একজন ডার্মারোলার ব্যবহারকারীর যদি বাসায় থেরাপি নেয় তাহলে সর্বোচ্চ 1mm পর্যন্ত ব্যবহার করা উচিত। এর ওপরে কোন ডলার সাইজ বাসায় ব্যবহার করা উচিত না। 1mm সাইজ এর বড় ডার্মারোলার ব্যবহার করার জন্য প্রফেশনাল কোন ডার্মালজিস্ট এর প্রয়োজন। 

1mm এর বড় সকল ডার্মারোলার প্রফেশনাল লেভেলের বিভিন্ন থেরাপি দিয়ে থাকে। যেগুলো বাসায় কখনোই করতে পারবেন না। তবে ছোট যে সাইজগুলো দিয়ে বাসায় নিজেই থেরাপি নেয়া যায়।

টাক মাথার জন্য ডার্মারোলার সাইজ বাছাই

সম্পূর্ণরূপে টাক মাথার জন্য কেমন ডার্মারোলার বাছাই করবেন? টাক মাথার স্কিনের উপর নির্ভর করে টাক মাথায় কি ধরনের ডার্মারোলার ব্যবহার করবেন। যদি মাথার স্কিন খুবই পাতলা হয় তাহলে 0.5mm ডার্মারোলার আদর্শ সাইজ। এছাড়া, যদি স্কিন মোটা হয় বা স্কিন শক্ত হয় তাহলে 0.75mm ব্যবহার করতে পারেন।
ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়
ডার্মা রোলার দিয়ে টাক মাথায় চুল গজানোর উপায়

বেশি চুলের জন্য ডার্মারোলার সাইজ বাছাই

বেশি চুলে কি ধরনের ডার্মারোলার সাইজ নির্ধারণ করবেন? এটা অবশ্যই ডার্মালোজিস্ট এর সাথে পরামর্শ নেয়া উচিত। বেশি চুলের মাথার ব্যক্তি বা মোটা চামড়ার মাথার ব্যক্তির জন্য 1mm সাইজ ব্যবহার করা উচিত। যদি এর থেকে বড় সাইজে ডার্মারোলার ব্যবহার করতে চান তাহলে ডার্মালোজিস্ট এর থেকে পরামর্শ নেয়া উচিত। এছাড়া, যেসকল দোকান থেকে কিনবেন ওই সকল দোকানদার থেকেও আপনি এই টিপস গুলো নিতে পারেন।

ডার্মারোলার ব্যবহারের সতর্কতা ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া

ডার্মারোলার ব্যবহারের সময় বেশ কিছু সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। একটি ডার্মারোলার দীর্ঘদিন ব্যবহার করা উচিত না। ডার্মারোলার দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে টাইটেনিয়ামযুক্ত নিডেলে এলার্জিজনিত সমস্যা হতে পারে। একটি ডার্মারোলার  ম্যাক্সিমাম  ৪৫দিন ব্যবহার করা উচিত। 

৪৫দিন পরে নতুন একটি ডার্মারোলার ব্যবহার করা উচিত। ডার্মারোলার ব্যবহার করার আগে সবচাইতে বড় একটি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মাথার স্ক্রিন সম্পূর্ণ পরিষ্কার থাকতে হবে। মাথায় যদি ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া থাকে তাহলে স্কিনে ইনফেকশন হওয়ার চান্স থাকে। 

মাথায় ডার্মারোলার দিয়ে রোলিং করার সময় প্রচুর ছিদ্র হয়। ঐ সকল স্থানে ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়াজ জনিত সমস্যা হতে পারে। পরবর্তী ইনজুরি স্থানে ইনফেকশন এর মাধ্যমে আপনার স্কিন নষ্ট হতে পারে। ডার্মারোলার ব্যবহার করার আগে আরেকটি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।  ডার্মারোলার ব্যবহার করার পূর্বে ডার্মারোলার সম্পূর্ণ জীবনমুক্ত করে নিতে হবে। 

জীবানু নাশক দ্বারা ডার্মারোলার পরিষ্কার করতে হবে। সম্পূর্ণরূপে জীবাণু মুক্ত করার পরে স্কিনে রোলিং করতে পারেন। ডার্মারোলার দিয়ে থেরাপি নেয়ার পরে মাথার স্কিন আবারও জীবাণু নাশক দ্বারা পরিষ্কার করুন। তুল্ বা টিস্যুতে জীবানুনাশক নিয়ে মুছে ফেলতে হবে।  সর্বশেষে ডার্মারোলার আবারো পরিষ্কার করতে হবে, যাতে ময়লা বা জীবানু না লেগে থাকে।

ডার্মারোলার কিভাবে ব্যবহার করবেন, এবং কিভাবে মাথায় রোলিং করবেন? এটা সম্পর্কে অনেক তথ্য জানতে হলে আমাদের পোস্টগুলো দেখতে পারেন। তাছাড়া ডার্মারোলার ব্যবহার করার আদর্শ নিয়ম নিয়ে বেশ কিছু টিপস রয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে টাক মাথায় খুব দ্রুত চুল গজানোর জন্য ডার্মারোলার ব্যবহার করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। 

এছাড়া, ডার্মারোলার থেরাপি যে কেউ বাসায় বসে করতে পারে। তাই ডার্মারোলার থেরাপি খুবই সহজ এবং কার্যকরী একটি থেরাপি। এর মাধ্যমে অনেক ব্যক্তি ভালো ফলাফল পেয়েছে। তাই, একটি ডার্মারোলারের মাধ্যমে আপনিও থেরাপি নিতে পারেন। আপনার মাথার চুল খুব দ্রুত বড় হবে এবং টাকা জনিত সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

ডার্মা রোলার ব্যবহারে সত্যিই মাথার চুল, নতুন দাড়ি ও স্কিনের লাবন্যতা বেড়ে যায়। বাসায় ব্যবহারের আগে অবশ্যই নিয়ম কানুন এবং ব্যবহার বিধি জেনে নিন। ডার্মা রোলার এমন একটি ডিভাইস যার ব্যবহার না জেনে রাবিং করলে ক্ষতি হতে পারে। তবে একটি বিষয়ে জানা ভালো একটি ডার্মা রোলার ডিভাইস ১.৫ মাসের বেশি ব্যবহার করা উচিত না, এতে মেটালিক এলার্জি হতে পারে।