প্রস্রাব সতেজ রাখার ঘরোয়া উপায় এবং করণীয়

সতেজ প্রস্রাব কি? ঘন ঘন প্রস্রাব সমস্যার সমাধান। ঘরোয়া উপায়ে প্রস্রাব সতেজ রাখার টিপস। প্রস্রাব কেনো হলুদ ও তীব্র ঝাঁঝালো হয়। সতেজ প্রস্রাব উৎপাদন,

প্রস্রাব সতেজ কি? প্রস্রাব ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়। ঘন ঘন প্রস্রাব দূর করার ব্যায়াম। ঘন ঘন প্রস্রাব বন্ধ করার ঔষধ। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত। ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ। ঘন ঘন প্রস্রাব দূর করার ঘরোয়া উপায়। সতেজ প্রস্রাব উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে কোন হরমোন। প্রস্রাবের সমস্যা লক্ষণ, কারণ, রোগ নির্ণয় এবং ঘরোয়া চিকিৎসা। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত। কত ঘন্টা পর পর প্রস্রাব হওয়া স্বাভাবিক। পুরুষের প্রস্রাব ক্লিয়ার না হওয়ার কারণ। ঘন ঘন প্রস্রাব হলে কি খাওয়া উচিত। ঘন ঘন প্রস্রাব কিসের লক্ষণ।

How to keep urine fresh
How to keep urine fresh

প্রস্রাব বা মূত্র ( Urine ) কিভাবে সতেজ রাখবেন? আমরা প্রতিদিন বাঁচার জন্য খাদ্য খেয়ে থাকি তার ভিতরে কিছু পানি থাকে। খাদ্যে ভিতরে থাকা পানীয় শরীরের ভিতরে গিয়ে পরিশোধিত হয়ে প্রস্রাবে পরিনত হয়। 

একজন মানুষের দৈনিক ৩ বা ৪ লিটার পানি পানি প্রয়োজন। আমরা বিভিন্ন খাবারের মাধ্যমে পানির ঘাটতি পূরণ করি। দেহের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। দৈনিক পরিশ্রম বা চলাফেরার মাধ্যমে দেহের পানি বের হয়ে যায়।

সতেজ প্রস্রাব কি? ঘন ঘন প্রস্রাব সমস্যার সমাধান

সতেজ প্রস্রাব হলো হলুদাভ ঝাঁঝালো এক রকম পানি যা মানুষের থেকে বের হয়। প্রস্রাব ( Urine ) দেখতে হলুদাভ হয় তবে সতেজ মূত্র হলুদাভ থাকে না। আমরা প্রতিদিন যে পানি বা খাবার খাই তা দেহের ভিতরে বিভিন্ন প্রকৃয়ার মাধ্যমে সতেজ প্রস্রাব তৈরি হয়। 

প্রস্রাব করার মাধ্যমে দেহের সকল বর্জ বের হয়ে যায়। তাছাড়া, দেহের ক্ষতিকর দূষিত যা আছে সব বের হয়ে যায়। একজন সুস্থ সবল মানুষ দিনে ৪/৫ বার প্রস্রাব করে। তবে অনেক ক্ষেত্রে পানি পান করার দিক দিয়ে বাড়তে বা কমতে পারে। অনেক মানুষ আছে যাদের দৈনিক  ৮/৯ বার বা তার বেশি মূত্র ত্যাগ করে। 

সতেজ প্রস্রাব ত্যাগ করা এটা খাবারের পরিমানের ওপর নির্ভর করে। অনেকের বিভিন্ন সমস্যার কারনে বেশি প্রস্রাব হতে পারে। নরমালি, সতেজ প্রস্রাব হলো সুস্থ একজন মানুষ দৈনিক যা খায় তার থেকে পরিশোধিত হয়। যদি প্রস্রাব দিনে ৪/৫ বার হয় এবং সেটা বেশি হলুদ বেশি ঝাঁজালো না হয় তখন সেটাই সতেজ প্রস্রাব বলা হয়।

প্রস্রাব কেনো বেশি হলুদ ও তীব্র ঝাঁঝালো হয়?

আমরা প্রতিদিন অনেক খাবার বা পানি খাই সেটাই প্রস্রাবে পরিনত হয়। পানি কম খাওয়া হলে তখনই সমস্যা হয়ে থাকে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সতেজ প্রস্রাব হতে দৈনিক ২ লিটার পানির প্রয়োজন। কিন্তু এর কম পানি পান করলে প্রস্রাব বা মূত্র হলুদ হতে পারে।শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় বেশি পানি পান করলে প্রস্রাব সতেজ হয়।

গড়মের সময় প্রায় অনেক মানুষের প্রস্রাব হলুদ তীব্র ঝাঁঝালো বা গন্ধযুক্ত হয়। গরমের সময় ঘরোয়া উপায়ে প্রস্রাব সতেজ করা উচিত। গড়মের সময় শরীরের প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। গরমে ঘামের কারণে দেহের অনেক পানি চলে যায় ফলে প্রস্রাব হলুদ ঝাঁঝালো হয়। অতিরিক্ত ঘামে দেহের পানি চলে যাওয়ার ফলে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। প্রয়োজনের তুলনায় পানি কম পান করলে প্রস্রাব হলুদ হওয়া স্বাভাবিক বিষয়।

অনেকের প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হয়। মূল কারণ হলো দেহের প্রয়োজনের তুলনায় কম পানি পান  করা। কম পানি পান করলে সতেজ প্রস্রাব হয়না। দেহের প্রয়োজনীয় উপাদান পরিপূর্ণ করে পানি। পানি কম পান করলে দেহের অনেক সমস্যা হয়ে থাকে। যেমন দেহের ঠোঁট বা গলা শুখিয়ে যায় বা দেহের চামড়া খসখসে হয়ে পরে। তাছাড়া, প্রস্রাব গন্ধযুক্ত ও হলুদাভ হয়।

সতেজ প্রস্রাব কেমন হয়

সতেজ প্রস্রাব হলো বর্নহীন পানির মত গন্ধ বিহীন। প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া হয় না বা ব্যাথা অনুভূতি হয় না। সতেজ প্রস্রাবের কোনো গন্ধ থাকে না এবং পরিমান মত মূত্র ত্যাগ করা যায়। 

একজন সুস্থ মানুষ দিনে গড়ে ৫/৬ বার মূত্র ত্যাগ করে এবং মূত্রের রং বর্নহীন গন্ধমুক্ত হয় তাহলে সেটা সতেজ প্রস্রাব বলে। রেগুলার সতেজ প্রস্রাব হলে কিডনির সমস্যা কমে যায়। আপনি তখনি বুঝবেন আপনার কিডনি ভালো, যখন রেগুলার সতেজ প্রস্রাব হবে। সতেজ প্রস্রাব না হলে কিডনির সমস্যা হতে পারে।

ঘরোয়া উপায়ে প্রস্রাব সতেজ রাখার টিপস

  • সতেজ প্রস্রাব পেতে দৈনিক কমপক্ষে ৪/৫ লিটার পানি পান করতে হবে। পরিমাণ মত পানি সতেজ প্রস্রাব হতে সাহায্য করে।
  • কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন একবারে পানি খেলে মূত্র তারাতাড়ি হবে। সতেজ প্রস্রাব হতে একেবারে বেশি পানি পান না করে কিছুক্ষণ পরপর পানি পান করা উত্তম।
  • গরমের সময় প্রস্রাব সতেজ রাখতে স্যালাইন পান করা উচিত, তাহলে শরীরের প্রস্রাব স্বাভাবিক হবে।
  • প্রস্রাব সতেজ রাখার প্রধান পানীয় হচ্ছে ডাবের পানি যা পান করলে মূত্র সতেজ হবে।
  • পানি জাতীয় খাবার বা পানি জাতীয় ফল বেশি বেশি পান করলে সতেজ প্রস্রাব হয়।
  • শীতের সময় মূত্র স্বাভাবিক হয়। শীতের সময় ঠান্ড পরিবেশ থাকায় দেহের পানি কম খরচ হয়। শীতের তুলনায় গরমে পানি বেশি বের হয়, তাই গরমের সময় সতেজ প্রস্রাব কম হয়।
  • দেহের পানি ধরে রাখার চেষ্টা করুন, কারণ দেহে যতক্ষণ পানি স্বাভাবিক থাকবে মূত্র ও সতেজ থাকবে।
  • গরমের সময় বাহিরে থাকলে কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করলে দেহের পানির পরিমান ঠিক থাকবে।
  • পানি জাতীয় ফল যেমন তরমুজ, আপেল, কমলা খেলে সতেজ প্রস্রাব হয়। অর্থাৎ যেসকল ফলে পানির পরিমান বেশি সেগুলো বেশি বেশি খাওয়া উচিত।
  • বেশি প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা থাকলে অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত।
  • তীব্র রোদে থাকলে প্রস্রাব হলুদ হয়ে যায় তাই  ঠান্ড স্থানে থেকে কাজ করুন। তাছাড়া গরমে বেশি বেশি শাকসবজি খেলে প্রস্রাব সতেজ হয়।  
  • তৈলযুক্ত খাবার কমিয়ে আনলে প্রস্রাব সতেজ হয়। এসব খাবারের ফলে প্রস্রাব সতেজ হয় এবং দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকে।
  • প্রস্রাব সতেজ পেতে কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো শরীর ঠান্ডা রাখে।

প্রস্রাব সতেজ না থাকলে যা ক্ষতি হতে পারে

কিডনির সমস্যা হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে প্রস্রাব সতেজ। কারণ মূত্র অস্বাভাবিক হলে বিভিন্ন সমস্যা হয়, যার মধ্যে অন্যতম কিডনির  সমস্যা। প্রস্রাবের ইনফেকশন সহ ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবনাতা বেড়ে যায়। প্রস্রাব স্বাভাবিক রাখলে ডায়বেটিস সহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমে যাবে। প্রস্রাবের সমস্যা নিরাময়ের ঘরোয়া উপায় ও ব্যয়াম।